শালীহর গ্রামে পাক বাহিনীর হানা

১৯৭১ সালের ২১ আগস্ট পাকবাহিনী একটি বিশেষ ট্রেনে কিশোরগঞ্জ যাওয়ার পথে বিসকা রেলওয়ে স্টেশনে নেমে পড়ে। এরপর তত্কালীন বিসকার রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার সলিম উদ্দিন (অবাঙালি) এবং আল বদর কমান্ডার আব্দুল মান্নান ফকিরের নেতৃত্বে উপজেলার হিন্দু অধ্যুষিত শালীহর গ্রামে হানা দিয়ে অগ্নিসংযোগ, লুটপাট ও তাণ্ডব চালায় পাকবাহিনী। গুলি করে হত্যা করে ১জন মুসলমান ও ১৩জন হিন্দুকে। গুলির মুখ থেকে কলেমা পাঠ করে সেদিন প্রাণে বেঁচে যান নগেন্দ্র চৌকিদার। তবে পাকবাহিনী ধরে নিয়ে যায় গ্রামের বাসিন্দা মুক্তিযোদ্ধা আবুল হাসিমের পিতা ছাবেদ আলী বেপারীকে। এরপর দীর্ঘ ৪৬ বছরে তার আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। সেদিন গ্রামে ঢুকেই পাকবাহিনী প্রথমেই গুলি করে হত্যা করে নিরীহ কৃষক নবর আলীকে। এরপর একে একে মোহিনী মোহন কর, জ্ঞানেন্দ্র মোহন কর, যোগেশ চন্দ্র বিশ্বাস, কিরদা সুন্দরী, শচীন্দ্র চন্দ্র বিশ্বাস, তারিণীকান্ত বিশ্বাস, দেবেন্দ্র চন্দ্র নম দাস, খৈলাস চন্দ্র নম দাস, শত্রুগ্ন নম দাস, রামেন্দ্র চন্দ্র সরকার, অবনী মোহন সরকার, কামিনী কান্ত বিশ্বাস, রায় চরণ বিশ্বাস। এ ছাড়াও ২৫ আগস্ট তাতকুড়া গ্রামের মৃণাল কান্তি বিশ্বাস ও ২৭ নভেম্বর মলামারা গ্রামের অধর সরকারকে গুলি করে হত্যা করে পাকবাহিনী। একই দিনে ময়মনসিংহ শহরের ব্যবসায়ী অধর সরকারের গৌরীপুরের বাসায় আশ্রিত শ্যাম বল্লদ সাহা, রমেশ চন্দ্র পাল, যোতিন্দ্র চন্দ্র পালকে ধরে নিয়ে যাওয়ার পর এখন পর্যন্ত তাদের কোনো খোঁজ পায়নি তাদের পরিবার। তবে ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাক্ষরিত একটি সান্ত্বনাপত্র ও অনুদানের দুই হাজার টাকা পেয়েছিল পাল পরিবারের সদস্যরা। কিন্তু স্বীকৃতি পায়নি।
তথ্যসূত্রঃ http://www.ittefaq.com.bd/print-edition/country/2017/12/16/243262.html