২৫শে মার্চের পরের লাশের স্তুপ ঢাকা শহর জুড়ে

বদলু ডোম
ওয়ারী সুইপার কলোনী,
ঢাকা।
আমি ১৯৭১ সনের ২৮শে মার্চ আমাদের সুইপার সুপারভাইজার পঞ্চমের দলে মিটফোর্ড হাসপাতালের লাশ ঘর থেকে লাশ তুলেছি। কয়েকদিন পরে আমি সুপারভাইজার সাহেব আলীর দলে মিলব্যারাক পুলিশ লাইনের নদীর পাড় থেকে পনের জন যুবক, একজন সাধু ও বৃদ্ধার ক্ষতবিক্ষত, ফুলা, পচা লাশ তুলেছি। প্রতিটি লাশ চোখ ও হাত-পা বাঁধা ছিল। এরপর আমরা বাবুবাজার পুলের উপর থেকে এক অন্ধ ফকিরের লাশ তুলেছি। সদরঘাট, শ্যামবাজার, ওয়াজঘাট, বাদামতলী এলাকায় আমরা নদীর পাড় ও পানি থেকে বৃদ্ধা, যুবা ও শিশুর লাশ তুলেছি। কয়েকদিন পর আমরা মন্দিরের সামনে থেকে দুধওয়ালা সাধুর লাশ তুলেছি, শাঁখারীবাজার প্রবেশ করে মন্দিরের সামনের বাড়ীর ভেতর থেকে শিশু-কিশোর, বৃদ্ধা-যুবা, যুবক-যুবতীর দশটি পোকায় খাওয়া গলিত লাশ নিয়ে এসেছি।
কয়েকদিন পর রমনা কালিবাড়ী থেকে, মন্দিরের ভেতর থেকে পাঁচটি এবং কালিবাড়ীর প্রবেশ পথে দুটি চোখ ও হাত বাঁধা পচা লাশ তুলেছি। গোয়ালঘরে তিনটি গরু গুলিতে ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখলাম। এরপর পাক সেনারা আমাদের নির্মমভাবে মারপিট করায় আমরা আর লাশ তুলতে যাই নাই।
স্বাক্ষর/-
বদলু ডোম
১১-৫-৭৪
সুত্রঃ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধঃ দলিলপত্র (৮ম খণ্ড)